মোজাদ্দেদে আজম হযরত হাতেম আলী রহঃ তার জীবনের প্রায় পুরোটা সময় জুড়ে আল্লাহর জমিনে আল্লাহ্র মনোনীত পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যয় করেছেন। তার জীবনের প্রতিটি কর্ম বিশ্লেষণ করলে রাসূলুল্লাহ সঃ এর বাতানো সুন্নাহই প্রস্ফুটিত হয়। দারুলউলুম দেওবন্দ থেকে
শিক্ষা জীবন শেষকরে যেমন জমিদারদের শোষণ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিজাতীয় সংস্কৃতি ও নাস্তিকতার গ্রাস থেকে মুসলিম উম্মাহকে বাচাতে লড়াই করেছেন।
ফুরফুরার আবুবকর সিদ্দীক ফুরফুরাভী রহঃ এর নির্দেশে কর্ম জীবনের পুরো অংশই দ্বীন প্রচারে বিলিয়ে দিয়েছেন। সমাজ থেকে বিলুপ্ত ইসলামের পূর্ণাঙ্গ রুপরেখা কোরআন-সুন্নাহ’র দলীলের মাধ্যমে পূণরুদ্ধার করেন। বিশেষত শরীয়াতের আমলী মাসয়ালার অর্ধাংশ তাযকিয়্যাতুন নফস বা ইলমে তাছাওউফকে যখন মোস্তাহাব এমনকি গাইরে শরয়ী বলে উম্মাহকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল ঠিক সে মুহুর্তে অসংখ্য বাহাস ও লেখনির মাধ্যমে তার ফরজিয়াত প্রমাণ করেছেন এবং তাছাওউফ অর্জনে কিতাবি ধারায় সঠিক পদ্ধতি বর্ণনা করে কিতাব রচনা করেছেন। যা উম্মাহর কল্যাণে কিয়ামত পর্যন্ত এক অমূল্য রত্ন হয়ে আছে।
তার কিতাবে সঠিক আলেম ও পীরদের পরিচয় তুলে ধরার পাশাপাশি, তাদের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যগগুলো তুলেধরেছেন।
উম্মাহকে সঠিক পথে চালাতে ইসলামের রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক দর্শন তুলেধরে রাজতন্ত্র-গণতন্ত্র নামে ৯ খন্ডে কিতাব লিখেছেন।
উম্মাহ যাতে পূর্ণাঙ্গ ভাবে ইসলামি জীবন যাপন করতে পারে এজন্য কুর আনের মৌলিক শিক্ষার ব্যতিক্রমী তাফসীর লেখার পাশাপাশি প্রায় ৩০ খানা কিতাব রেখেগেছেন। এক কথায় তার জীবনের একমাত্র মিশন ছিল ব্যক্তি,পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিধান প্রতিষ্ঠা করা। তার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি এ মিশন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়েছেন। ১৯৭৬ সালের ১লা জুন যখন মহান রবের ডাকে সাড়া দেন তখনও তার হাতে কিতাব ছিল। তিনি চিরনিন্দ্রায় শায়িত হওয়ার পড়ে হাত থেকে তার বুকের উপরে জড়িয়ে ছিল অমর হাদীস গ্রন্থ “সহীহুল বুখারি”। আজ তার ৪৫ তম ইন্তেকাল বার্ষিকি।মোজাদ্দেদে আজম হাতেম আলী (রহঃ) ইন্তেকাল করলেও তার কর্মের মাধ্যমে আমদের মাঝে অমর হয়ে আছেন।তার মিশনকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়া আমাদের দ্বায়িত্ব। তার লেখা প্রতিটি লাইন আমাদেরকে দ্বায়িত্ব পালনের তাগিদ দেয়। ঠিক তেমনি মরহুম নায়েবে রাসূল, শাইখুল ইসলাম আব্দুল ওয়াহিদ রহঃ এর প্রতিষ্ঠিত হযরত হাতেম আলী রহঃ ফাউন্ডেশন (HARF) আমাদের জিম্মাদারিকে আরো উচ্চতায় নিয়েগেছে। মোজাদ্দেদে আজমের ৪৫ তম বার্ষিকিতে তাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।মহান রবের নিকট আর্যি পেশ করছি তার প্রিয় এই বান্দাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সম্মানিত স্থানে স্থান দিক। আমাদেরকে তার সাথে হাউজে কাউসারের পানি পানে বিশ্বনবীর কাছে একত্রিত করুন। আজ শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আমরা তার রেখে যাওয়া মিশনকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করছি। দলমত নির্বিশেষে ইসলাম জারি-কায়েম এ মহান মিশনে অংশিদার হিসেবে আপনাদের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি।
দুধল পীরসাহেবের পক্ষে
মাওঃ তানভীর হাসান আল-মাহমুদ
পরিচাল-কার্য নির্বাহী পরিষদ
হযরত হাতেম আলী রহঃ ফাউন্ডেশন (HARF)