মোয়ামালাত ব্যাংক
একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্যঃ- বিকাশঃ- ০১৭৯১৫৫৯০০৮
______________________________________________________________________________
দানের গুরুত্ব ও মোয়ামালাত ব্যাংক প্রসঙ্গ
এ.এম.এম. তানভীর হাসান আল মাহমুদ
পরিচালক, হযরত হাতেম আলী (রহঃ) ফাউন্ডেশন (HARF)
আল্লাহর নির্দেশঃ আল্লাহ রব্বুল ইজ্জাত কুরআন মাজীদে একাধীকবার পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলাম বিশ্বময় প্রচার প্রসার ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সঠিক স্থানে তথা আল্লাহর রাস্তায় দানের নির্দেশ প্রদান করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে, হে মুমীনগণ! তোমরা দান কর; আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা থেকে সেদিন আসার পূর্বে যেদিন কোন বেচাকেনা, কোন বন্ধুত্ব এবং কোন সুপারিশ চলবেনা। (সুরা বাকারা -২৫৪)
অন্যত্র আল্লাহ ইরশাদ করেন:-
তোমরা কিছুতেই প্রকৃত কল্যাণ (জান্নাত) লাভ করতে পারবেনা যে পর্যন্ত না তোমার প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর পথে ব্যয় না করবে। (সূরা আল-ইমরান-৯২) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স:) বলেন মহান আল্লাহ বলেছেন , হে আদম সন্তানেরা তোমরা অকাতরে দান করতে থাকো, আমিও তোমাদের উপর ব্যয় করবো, নবী (স:) আরো বলেন আল্লাহর হাত প্রাচুর্যে পূর্ণ। রাত দিন অনবরত ব্যয় করলেও তা মোটেই কমছেনা। (মুসলিম ৩য় খন্ড-২১৭৯)
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যখন এ আয়াত নাযিল হইল তোমাদের প্রিয় বস্তু হতে ব্যয় (দান) না করা পর্যন্ত কিছুতেই কল্যাণ (জান্নাত) লাভ করতে পারবেনা । আবু তালহা (রাঃ) বলেন, এইতো মহা সুযোগ। আমাদের প্রতিপালক নিজেই আমাদের মাল থেকে চাচ্ছেন। তাই হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) আমি আপনাকে সাক্ষি রেখে আমার (বীরে হা) নামক বাগানটি আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিলাম। (হাদীস অংশ) মুসলিম শরীফ ৩য় খন্ড-২১৮৭)
ফজিলাত (গুরুত্ব):
আর তোমরা যা দান কর আল্লাহ তার প্রতিদান প্রদান করেন। (সূরা সাবা-৩৯)
তারা অল্প বা বেশী যা কিছু খরচ করুক না কেন? এসব (অর্থাৎ দানের প্রতিদান) তাদের নামে রেকর্ড করা হয় যাতে তারা যা করেছে তার সর্বোত্তম প্রতিদান আল্লাহ তাদের দিতে পারেন।(সূরা তাওবাহ-১২১)
আবু ইয়াহইয়া খারীম ইবনে ফাতিক (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সঃ) বলেছেন, যে আল্লাহর পথে একটি জিনিস দান করলো, তার জন্যে সাত শতগুণ সওয়াব লেখা হবে। (তিরমিযী)।
হযরত আদী ইবনে হাতিম তাই (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেনঃ কিয়ামতের দিন সবার সাথে তোমার রব কথা বলবেন। তখন সে (আল্লাহ) তার (বান্দার) ডান দিকে লক্ষ্য করবে এবং পূর্ব যা পাঠিয়েছে তা ছাড়া কিছুই দেখতে পাবেনা তারপর বাম দিকে লক্ষ্য করবে এবং পূর্বে যা পাঠিয়েছে তাছাড়া কিছুই দেখতে পাবেনা। এর পর সামনের দিকে লক্ষ্য করবে এবং জাহান্নাম ছাড়া কিছুই দেখতে পাবেনা।
(অর্থাৎ মৃত্যুর পরে কোনো সদকায়ে জারিয়ার মাধ্যমে আমল নামায় কোনো নেকী যুক্ত না হওয়া) সুতরাং তোমরা খেজুরের এক টুকরা দিয়ে হলেও (অর্থাৎ সামান্য দান দিয়ে হলেও) জাহান্নামের আগুন থেকে আত্ম রক্ষা কর। (বুখারী, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ) হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সঃ) বলেছেন দানশীলতা একটি বৃক্ষ যার মূল জান্নাতে আর ডালÑপালা দুনিয়াতে ঝুঁকে রয়েছে। যে তার কোন ডাল আকড়ে ধরবে তাকে সে (তার দান) অবশ্যই জান্নাতে নিয়ে যাবে। (তানযীহুশ শরীয়াহ ২য় খন্ড-১৩৯ পৃষ্ঠা)
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন। আকাশের দরজায় দন্ডায়মান হয়ে এক ফেরেস্তা বলে যে ব্যক্তি আজ ঋণ দিবে (অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলাম প্রচারÑপ্রসারে দান করবে) আগামীকাল (হাশরের ময়দানে) তা (এর প্রতিদান) পাবে। আরেক ফেরেস্তা ঘোষণা করে হে মানুষ মৃত্যুর জন্য জন্ম গ্রহণ কর আর ধ্বংসের জন্য নির্মাণ কর।(মুসনাদে আহমাদ, বুখারী, মুসলিম)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসূল (সঃ) কে বলতে শুনেছি যেই মুসলমান কোন মুসলমানকে একখানা কাপড় পরিধান করাবে সে আল্লাহ পাকের খাছ হেফাজতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত দানকৃত কাপড়ের অংশ গৃহীতা মুসলমানের পরনে থাকবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন। যে ব্যক্তি তার হালাল উপর্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ কিছু দান করবে, আর আল্লাহপাক পবিত্র। তিনি হালাল বস্তু ব্যতিত কিছু কবুল করেন না। আল্লাহপাক তাঁর দান ডান হাতে (সম্মানের সাথে) গ্রহণ করেন, অতঃপর তিনি গৃহীত দানকে লালন পালন করেন, যেমনিভাবে তোমাদের কেহ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করে থাকে। অবশেষে ঐ দান পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি আরজ করল ইয়া রাসুলাল্লাহ (সঃ) উত্তম মুসলমান কে? তুমি অন্যকে খাদ্য খাওয়াবে পরিচিত ও অপরিচিত লোককে সালাম দিবে (বুখারী শরীফ)।
রাসূল (সঃ) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে বনী আদম! আমি রুগ্ন ছিলাম, তুমি আমার রোগের খোঁজ খবর নেওনি। সে বলবে, ইয়া আল্লাহ আমি কি করে আপনার রুগ্নাবস্থার খবর নিতে পারি? আপনি তো রব্বুল আ’লামীন সমস্ত সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। আল্লাহ বলবেন তোমার কি জানা নেই আমার অমুক বান্দা রুগ্ন হয়েছিল। যদি তুমি তাঁর রুগ্নাবস্থায় খোঁজ খবর নিতে তবে আমাকে সেখানে পেতে। হে বনী আদম আমি তোমাকে খাইয়েছি, কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে বলবে ইয়া আল্লাহ আমি কি করে আপনাকে খাওয়াতে পারি? আপনিতো রব্বুল আলামীন। আল্লাহ বলবেন আমার অমুক বান্দা খেতে চেয়েছিল, তুমি তাকে খাওয়াও নি। যদি তাকে খাওয়াতে তবে তা আমার কাছে পেতে। হে বনী আদম আমি তোমার কাছে পানি চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে বলবে ইয়া রব! আমি কিভাবে আপনাকে পানি পান করাতাম? আপনি তো রব্বুল আলামীন। আল্লাহ বলবেন আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তাকে পানি পান করাওনি। যদি করাতে তবে তা আমার কাছে পেতে (মুসলিম শরীফ)।
হাদীস শরীফে রয়েছে, সদকাকারী (কেয়ামতের দিন) আপন সদকার ছায়ায় থাকবে, এমনকি এ অবসস্থায়ই মানুষের (হিসাব নিকাশ) ফয়সালা হবে। (মুসলিম)
যে নিজের মিসকীন ভাইকে পেট পুরে খাওয়াবে এবং পানি পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে সাত খন্দক পরিমান দূরে রাখেন। একেক খন্দকের মধ্যবর্তী দূরত্ব পাঁচশ বছরের সমান।
রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন, সদকা (দান) এমনভাবে গোনাহ দূর করে যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়। (মুকাশফাতুল কুলুব)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যোবায়ের (রাঃ) দুইটি বস্তায় ভরিয়া অনেক সম্পদ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর খেদমতে প্রেরণ করিয়াছিলেন। ইহার পরিমাণ প্রায় একলক্ষ আশি হাজার দিরহাম ছিল। হযরত আয়েশা (রাঃ) একটি বড় পাত্রে করিয়া তাহা লোকের মধ্যে বন্টন (দান) করিয়া দিলেন। (মুসলিম শরীফ)
দানের পথে বাঁধা :
দানের পথে বাঁধা প্রধানত দুই ধরনের
১। শয়তানের পক্ষ থেকে
২। কু-পাত্রে দান
১। শয়তান মানুষকে ভয় দেখায় যদি তুমি দান কর তাহলে তোমার সম্পদ হ্রাস পাবে তুমি গরীব হয়ে যাবে। অর্থাৎ দান সম্পর্কে মানুষের মনে ভীতি তৈরি করা। কোরআন মাজীদে ইরশাদ হচ্ছে :-
অর্থাৎ শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার নির্দেশ দেয়। আর আল্লাহ (দানের কারণে) তোমাদেরকে তাহার ক্ষমা অনুগ্রহের (মাল রাশি বৃদ্ধি করার) প্রতিশ্র“তি প্রদান করেন। আল্লাহ প্রাচূর্যময়, সর্বজ্ঞ।
কু-পাত্রে দানঃ মূল্যবান জিনিসের মূল্য থাকে যতক্ষণ তা মূল্যবান পাত্রে রাখা হয়। কিংবা মূল্যবান জিনিসের সাথে ভেজাল মিশ্রিত না হয়। যেমনঃ এক বালতি দুধ এমন একটি পাত্রে রাখলেন যে পাত্রের নিচে কিছু প্রসাব জমে আছে কিংবা দুধ ভালো পাত্রেই রাখলেন। ভালো করে সংরক্ষণ না করায় নাপাক বস্তু মিশ্রিত হয়েছে তখন যেমন ঐ দুধের মূল্য থাকেনা ঠিক তেমনি ইসলাম বিরোধী কোনো কাজ, অপসংস্কৃতি, গান, বাদ্য, বিধর্মী এনজিও এবং পূর্ণাঙ্গ ইসলামের মাসয়ালা বিলুপ্ত কারীদের কোন কার্যক্রমে দান করা। এ দানের মাধ্যমে শয়তানের হাত শুধু শক্তই হয়না। পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলামের কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ করার মাধ্যমে আল্লাহর গজবে পতিত হয়। কুরআন মাজীদে ইরাশদ হচ্ছে – আল্লাহ গজবে পতিত হয় , কাফেরগণ তাদের মাল ব্যয় করে আল্লাহর পথে বাঁধা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্যে। এখন তারা আরো ব্যয় করবে, এভাবে অচিরেই এই মাল খরচ তাদের অনুতাপ-অনুশোচনার দূর্ভাগ্যের কারণ হবে। অতঃপর তারে পরাভূত হতে হবে। পরিনামে কাফেরদের জাহান্নামে অবস্থান করতে হবে। (সূরা আনফাল-৩৬)
রাসূল (সঃ) ইরাশাদ করেন, আর দূর্ভাগা সে ব্যক্তি যার হাত দিয়ে বিশৃঙ্খলা এবং দু®কৃতি প্রকাশিত হয়।
অতএব, একথা প্রতিয়মান যে, দানের পথে প্রথম বাঁধা তথা অন্তরের মাঝে দান সম্পর্কে বাজে প্রশ্নের উদয় হয়, শয়তানের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় প্রকার বাঁধা কুপাত্রে দানের আহবান আসে মানব শয়তানের থেকে। আমাদেরকে আল্লাহর প্রিয় হতে হলে শয়তানকে চিনে তার বাঁধা অতিক্রম করতে হবে।
দান সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণাঃ দান সম্পর্কে সমাজ প্রচলিত মারাত্মক ভুল ধারণা হচ্ছে। বিপদে পড়লেই বোধহয় দান করতে হয়। অসুখ, বালা-মুসিবাত কিংবা কোনো সমস্যায় পড়লে তা থেকে মুক্তি লাভের জন্য দান করে থাকে। উদ্দেশ্যপূর্ণ হলে দানের কথা বেমালুম ভুলে যায়।
সমাজে প্রচলিত আরেকটি ভুল ধারণা হচ্ছে যারা বিত্তশালী ধন সম্পদের মালিক দানের হুকুম শুধু মাত্র তাদের জন্যই কোরআন মাজীদে এবং হাদীস শরীফে এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণার প্রতিয়মান হয়েছে।
আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের পরিচয় দিতে গিয়ে ইরশাদ করেন :- যারা স্বচ্ছল অবস্থায় দান করে এবং অস্বচ্ছল অবস্থায় দান করে এবং যারা (অন্তরের অসৎ সভাব) গজব (রাগ) কে (কিতাবের বিধান অনুযায়ী) নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে ক্ষমা করে এসব লোককেই আল্লাহ ভাল বাসেন ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কৃপণ হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের কেহ সুস্থ অবস্থায় এক দিরহা দান করা মৃত্যুর সময়ে একশত দিরহাম অসিয়ত করে যাওয়া থেকে উত্তম (তাম্বিহুল গাফেলীন)
উক্ত হাদীসের মাধ্যমে প্রতিয়মান হয় বালা মুছিবতি ছাড়া সর্বদা-সর্বাবস্থায় দান করলে সওয়াব ও শতগুণ বেশি।
যেখানে এ আমানত নিরাপদঃ ধন-সম্পদ আল্লাহ প্রদত্ত আমানত। হাশরের প্রান্তরে প্রত্যেকের কাছ থেকে আল্লাহ তায়ালা এ আমানতের হিসাব গ্রহণ করবেন। অতএব এমন স্থানে এ আমানত গচ্ছিত রাখা উচিৎ যেথায় নিরাপদ থাকবে এবং হাশরের প্রান্তরে উপকারে আসবে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, যদি তুমি তোমার সম্পদকে এমন স্থানে জমা রাখতে চাও যেখানে পোকা খাবেনা, ডাকাতেও ছিনিয়ে নিবেনা তাহলে দান-সদকা করে দাও (তাম্বিহুল গাফেলীন)। অবশ্য সে দান হতে হবে সঠিক পাত্রে। অর্থাৎ আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) এর পথে। রাসূল (সঃ) এর রেখে যাওয়া পূর্ণাঙ্গ দ্বীন তথা আকাইদ, তাছাওউফ ও ফেকাহের সমন্বয়ে দ্বীন যা পৃথিবী থেকে আজ বিলুপ্ত আর এ দ্বীনের পূর্ণ রূপটি কোরআন-সুন্নাহ ও অতীব যুগের নায়েবে রাসূলদের কিতাবের অকাট্য দলীলের মাধ্যমে আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন মোজাদ্দেদে আ’জম আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ হাতেম আলী (রহঃ)। তিনি আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছেন কিন্তু তার রেখে যাওয়া পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের মিশনকে বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে দেয়া আমাদের দ্বায়িত্ব। আর এ দ্বায়িত্বের প্রেরণা থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মোজাদ্দেদে আজমের নামে ‘‘হযরত হাতেম আলী (রহঃ) ফাউন্ডেশন (HARF)। আর উক্ত ফাউন্ডেশন উচু-নিচু, ধনী-দরিদ্র, শ্রমিক, দিনমজুর চাকুরিজীবী, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, ছাত্র, শিক্ষক, পুরুষ, মহিলা সমাজে পূর্নাঙ্গ দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত পরিকল্পিত কর্মসূচির মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে। যার মূল লক্ষ্য পূর্ণাঙ্গ দ্বীনকে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়ে আল্লাহ ও রাসূল (সঃ) এর সন্তুষ্টি অর্জন। আর পূর্ণাঙ্গ দ্বীন জারি কায়েমের লক্ষ্যে নেয়া এ কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা প্রতি মু’মীনের কর্তব্য।
ইরশাদ হচ্ছে:- অর্থাৎ তারাই মু’মিন, যারা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ করেনা এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন সম্পদ দ্বারা জেহাদ (পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠায় প্রাণ-পণ চেষ্টা) করে তারাই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।
হযরত হাতেম আলী (রহঃ) ফাউন্ডেশন (HARF) এর পূর্ণাঙ্গ দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে যাতে সকল মানুষ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণ করতে পারে সে লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “মোয়ামালাত ব্যাংক” যা একটি ছোট্ট টেবিল ব্যাংক। যা আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত কবুল করেছেন, তা সীমিত সময়ের মধ্যেই প্রমানিত হয়েছে। এ ব্যাংকে মানত করে তার ফলাফল প্রাপ্তির অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমাদের কাছে রয়েছে। আপনিও এ ব্যাংকটি সংগ্রহ করতে পারেন। আপনার নিকটস্থ কোনো (HARF) এর সদস্যের মাধ্যমে কিংবা এর (HARF) অফিসের নম্বরে যোগাযোগ করে এবং আপনার আয় থেকে কিছু টাকা অর্থাৎ আপনি বাজার করে আসলেন কিংবা কোনো কাজ থেকে বাসায় ফিরলেন অনেক সময় দেখা যায় খুচরা কিছু টাকা বা পয়সা পকেটে আছে আপনি হাশরের দিনের জন্য দ্বীন প্রতিষ্ঠার কর্মসূচিতে অর্থাৎ মোয়ামালাত ব্যাংকে রেখে দিলেন। কিংবা কোথাও যাচ্ছেন পথের বালা মুসিবত থেকে যেন আল্লাহ হেফাজত করে এ উদ্দেশ্যে কিছু পয়সা/টাকা দান করলেন।
ইরশাদ হচ্ছে:- তারা কি এটা জানেনা যে আল্লাহই নিজ বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং তিনিই দান খয়রাত কবুল করেন (কুদরতি ভাবে) নিজে “মোয়ামালাত ব্যাংক” সংগ্রহ করে দান করুন এবং অন্যকেও দান করতে উৎসাহিত করুন। আপনার উৎসাহে কেহ দান করলে আপনিও তার দান পরিমাণ সওয়াব পাবেন তাতে দানশিলের সওয়াব থেকে কিছু কমবেনা। আল্লাহ আমাদের সকলকে কৃপণতার গজব থেকে মুক্ত করে দানশিলের দলভুক্ত হয়ে হযরত আবুবকর (রাঃ), হযরত ওমর (রাঃ), হযরত ওসমান গনী (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) সাথে হাশরে বসার তাওফিক দিন (আমিন)।